মাশরুম কেন খাবেন? | Why will you eat Mashroom?

মাশরুম
মাশরুম কি

সহজ কথায় মাশরুম (ইংরেজিতে- Mashroom) একটি ছত্রাক যা খাওয়ার উপযোগী। বিশদভাবে বললে, "মাশরুম একটি ব্যাঙের ছাতার মত দেখতে ছত্রাক যা একইসাথে বিষাক্ত, ভক্ষনযোগ্য এবং ঔষধি প্রকারের হয়ে থাকে। তবে ব্যাঙের ছাতার সাথে এদের অনেক পার্থক্য রয়েছে।"



মাশরুমের প্রকারভেদ 

পৃথিবীতে এযাবৎ প্রায় ৩ লক্ষ প্রজাতির মাশরুম পাওয়া গিয়েছে। যার প্রায় ২ লক্ষ ৮৬ হাজার প্রজাতি খাওয়ার অযোগ্য। আনুমানিক চৌদ্দ হাজার প্রজাতির মাশরুমের ওপর গবেষণা চলছে। তার মানে সব ধরনের ছত্রাকই মাশরুম নয়। শুধুমাত্র খাওয়ার যোগ্য ছত্রাকই মাশরুম বলে পরিগনিত হয় অর্থাৎ সকল মাশরুমই ছত্রাক তবে সকল ছত্রাক মাশরুম না। একারনেই পৃথিবীতে ৩ লক্ষ প্রজাতির ছত্রাক থাকলেও মাত্র ২০০ প্রজাতির ঔষধ হিসেবে খাওয়ার উপযোগী ছত্রাক তথা মাশরুম পাওয়া গিয়েছে। আর বাকী ১ হাজার ৮০০ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়ার উপযোগী হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৩০ টি প্রজাতি বানিজ্যিক ভিত্তিতে এবং ১০ টি ইন্ডাট্রিয়াল স্কেলে চাষ করা সম্ভব। বলে রাখা ভালো প্রতিটি প্রজাতিরই আবার অসংখ্য চাষ উপযোগী স্ট্রেইন (বর্ন) রয়েছে।

এর কিছু প্রজাতি এক রাতের মধ্যে আহরনযোগ্য বা খাওয়ার যোগ্য হয়ে থাকে। একারনেই বিশ্বব্যাপী এর প্রসার দ্রুত বেগে হচ্ছে। তবে বেশীরভাগ মাশরুমই ধীরে ধীরে বড় হয়ে থাকে। এদের অধিকাংশই  ব্যাসিডিওমাইকোটা এবং কিছু অ্যাসকোমাইকোটার অন্তভুক্ত। এবং এগারিকাস বিসপোরাস প্রজাতির মাশরুম পৃথিবীর সর্বত্র চাষাবাদ করতে দেখা যায়।


বাংলাদেশে মাশরুম 
বাংলাদেশে মাশরুম 

বিশ্বের সবচেয়ে সফল মাশরুম উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে চীন, যারা তাদের মোট দেশীয় উৎপাদনের ৫০ শতাংশই মাশরুম। চীনারা প্রতি বছর তাদের ১২০ কোটি মানুষের জন্য গড়ে ২.৬ কিলোগ্রাম (৬.০০ পাউন্ড) করে উৎপাদন করে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশেও জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারন কেন্দ্রে ১৫৭ টি চাষাবাদযোগ্য মাশরুমের স্ট্রেইন রয়েছে।

মাশরুমের খাবার

তবে অন্যান্য উদ্ভিদের মত এই মাশরুমের খাদ্য তৈরির জন্য সালোকসংশ্লেষন পদ্ধতি অনুসরন করে সূর্যের আলো গ্রহনের প্রয়োজন হয় না, মাশরুম চাষাবাদে শুধুমাত্র পানি ও তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হয়।
মাশরুম শিকারী ও শিকার করা
যারা মাশরুম খায় তাদের "মাইকোফেজিস্টস" নামে অভিহিত করা হয়। এবং এই মাশরুম খোজার যে প্রক্রিয়াকে "মাশরুমিং" বলা হয়ে থাকে।

মাশরুম কেন খাবেন

মাশরুম খুবই উপাদেয় একটি খাদ্য। তাছাড়া উদ্ভিজ্জ আমিষের জন্য এটি সারা বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই খাবারটি একাধারে আমিষের ঘাটতি মিটায় এবং ঔষধ হিসেবে ব্যাবহৃত হয়। নিচে এর ঔষধি গুনাগুন গুলি নিচে দেওয়া হলোঃ

১) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
২) ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধী
৩)  মেদ-ভূরী কমাতে সহায়ক
৪) অর্শরোগ নিরাময়ক
৫)  বয়স্কদের আদর্শ আমিষ
৬)  এজমারোগ প্রতিরোধক
৭) যৌনশক্তি বৃদ্ধিকারক
৮) ক্যান্সার ও এইডস প্রতিরোধক
৯) রূপচর্চায় অতুলনীয়
১০) টিউমার নিরাময়ক
১১) কোষ্ট কাঠিন্য ও বদহজম দূর করে
১২) বাচ্চা ও গর্ভবতী মায়েদের আদর্শ খাবার
১৩) এলার্জী রোগের মহৌষধ
১৪) চর্ম রোগে উপকারী
১৫) জন্ডিস রোগের প্রতিরোধক
১৬) চুল পড়া ও পাকা রোধ করে
১৭) রক্ত সল্পতা দূর করে
১৮) হৃদরোগ প্রতিরোধক
১৯) উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

মাশরুম চাষে ভবিষ্যৎ 

যে কেউ চাইলেই সহজে ৩ দিনের একটি ট্রেইনিং করে মাশরুম চাষের দ্বারা জীবিকা ধারণ করে চলতে পারেন, এছাড়াও চাইলে দেশ-বিদেশে রপ্তানি করে দেশের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন।

যাইহোক, আশা করি আপনারা মাশরুমের গুনাগুন ও সার্বিক উপকারীতা ও এর চাষবাদ বিষয়সমূহ সঠিক ভাবে  বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। যদি আরো জানার আগ্রহ থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভূলবেন না। আর যে কোন বিষয়ে জানতে আমাদের ইমেইল অথবা ফেইসবুক পেইজে মেসেজ করে জানাতে পারেন।

যোগাযোগের ঠিকানাঃ 

Email: totthomia@gmail.com
FB Page: facebook.com/totthomia 

Post a Comment

0 Comments