ক্রেতা বা দোকানদারকে পটান মাত্র ৫ টি কৌশলে ( পর্ব- ২) | How to Seduce a Customer

Customer Seduction Theory
সেলস জব একটি মজার জব, তা যদি আপনি মনে ধারণ করতে পারেন। সেলসে ভালো করতে অবশ্যই আপনাকে ইউনিক ইউনিক কৌশল নিয়ে কাজ করতে হবে। সেই কৌশল টি যদি একবার কাজে লেগে যায়। আপনাকে আর কে পায়। এই কৌশল গুলো কেউ কাউকে সাধারণত বলে দেয় না। কারন সেলস জবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্য সব জবের চাইতে অনেক বেশী। কারন সেলস প্রফেশনে তেমন কোন অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় না। 



তবে সেলস পেশায় ভালো কাজ তথা বিক্রয় বাড়ানোর কোন বিকল্প থাকে না। আপনি এই পেশায় মামা-খালু যতই ধরেন না কেন, লাভ নেই। দিন শেষে আপনার বিচার হবে আপনার কর্মদক্ষতা, সেলস পারদর্শীতা এবং আপনার ব্যাক্তিত্বের ওপর। তাই আজ আমরা দোকানি বা ক্রেতাকে পটানোর আরো কিছু কৌশল আপনাদের সাথে শেয়ার করছি যাতে আপনারা এই পেশায় নিশ্চিত সাফল্য লাভ করেন। ভালোভাবে রপ্ত করতে ১ম পর্বটি আগে পড়ে নিন। আর বন্ধু, কলিক বা নিকটজনদের সাথে লেখাটি Facebook, Instagram, Whatsapp বা Twitter er য়ে শেয়ার করে রাখুন।

গত পর্বে আমরা জেনেছি ক্রেতা বা দোকানি কে পটানোর ৩ টি কৌশল। আজ আমরা বাকি দুইটি কৌশল শিখবো এবং এই লেখার শেষে আরো কিছু বাড়তি টিপস থাকবে ক্রেতা কে পটানোর।

১ম পর্বের হাইলাইটসঃ (দেখতে নিচে Popular Posts বিভাগে যান অথবা নিল অক্ষরে দেয়া লিংকে ক্লিক করুন।


১. পাত্রী দেখানো কৌশল (Bridegroom Strategy)
২. ভালোবাসা/সম্পর্ক কৌশল ( Making Love Strategy)
৩. স্যাম্পল হিসাবে দেওয়া কৌশল (Sampling Call Strategy)

আজ আমরা আলচনা করবো বাকি দুইটি কৌশল নিয়ে। 

৪. হাজিরা কল কৌশল (Just Presence Call Strategy): আমরা প্রায় সময়ই সেলস পিপল কে বলতে শুনি, "ভাই এতো কষ্ট করে আইলাম, ফিরাইয়া দিবেন, অল্প কিছু অর্ডার দেন না!" হ্যা, ঠিক এই ব্যাপারটাই হচ্ছে হাজিরা কল কৌশল। এতে দোকানি বা কাষ্টমার আপনার প্রতি একটি দূর্বলতা এবং তার চেয়েও বেশি দায়িত্ববোধে আক্রান্ত হয়। এবং ৯০% ক্ষেত্রে দোকানি আপনাকে ফেরাতে পারে না। নিচের কথাগুলো আপনাকে সাহায্য করতে পারে। 

  • শুধু উপস্তিতি নিশ্চিত করার জন্য অল্প কিছু পন্য দিচ্ছি।
  • বসদের হাত থেকে বাচতে অল্প পরিমান পন্য দিচ্ছি। ভাই হিসেবে চাকুরীটা বাচাতে সাহায্য চাচ্ছি।


৫. নিরপত্তা নিশ্চিতকরণ কৌশল (Security Ensuring Strategy): সব কথার এক কথা, দোকানি নিশ্চিত ও নিশ্চিন্ত হতে চান যে, আপনি আবার তার দোকানে আসবেন। যদি আপনি তাকে এই নিশ্চয়তা না দিতে পারেন, তবে নির্ঘাত আপনাকে ফেইল মারতে হবে। তাই নিম্ন বিষয়গুলি খেয়াল রাখুনঃ
  • আপনার ডিলার এলাকায় সুপরিচিত হলে তার নাম বলুন।
  • ডিলার হাউজের লোকেশন টা তাকে বলে আস্বস্ত করুন।
  • ডিলার সুপরিচিত কোন পন্যের ব্যাবসায় করলে সেই ব্যাবসার কথা উল্লেখ করুন।
  • আপনার নাম বলুন,  নাম্বার দিন  এবং আপনার বাসা তার দোকানের আশেপাশে হলে তাকে আপনার বাড়ির লোকেশন বলে  তাকে আপনার প্রতি আস্থা জোগাতে সহায়তা করুন।


এবারে কিছু বাড়তি টিপসঃ 

১. মৃদু হাসিঃ 
একটি হাসি দিয়ে দোকানির সাথে কথা বলা শুরু করুন। কাজের শুরুতেই এই হাসিটা আপনার জন্য বড় একটা অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, আপনি যদি বিপরীত পক্ষের লোকটিকে দেখে হাসেন তবে তার ব্রেইন য়ে কিছু পজিটিজ সিগনাল চলে যাত আপনার ব্যাপারে। সে সময় আপনার কথায় তার সায় দেয়ার প্রবনতা বৃদ্ধি পায়।  

২. যেকোন বিষয়ে সাহায্যের মনোভাবঃ মনে করুন দোকানি ট্রেড লাইসেন্স করতে চাচ্ছে কিন্তু যানে না কীভাবে করবে! পারলে তাকে এব্যাপারে তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন। বা তিনি চাচ্ছেন নতুন কোন ব্যাবসায় বাড়াতে, এব্যাপারে জানা থাকলে আপনার অভিজ্ঞতা তাকে শেয়ার করুন। দেখবেন, আপনাকে সে  আজীবন মনে রাখবে।

৩. তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানঃ মনে করুন, পন্য সংক্রান্ত বা ডেলিভারি সংক্রান্ত কোন সমস্যায় সে পড়েছে। এমতাবস্থায় আপনার উচিৎ তাৎক্ষণিক সে ব্যাপারে স্টেপ নিয়ে সমাধান করে দেয়া।

৪.  আত্বিয়করন/পার্সোনাল রিলেশনঃ সকলকে ভিন্ন ভিন্ন রিলেশনে নাম দিতে পারা, আপনাকে দোকানির নিকট আরো গ্রহন্যোগ্য করে তোলে। এক্ষেত্রে বয়স, সামাজিক মর্যাদা, দোকানির মনোভাবের উপর গুরুত্ব আরোপ করে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকার কোশল গ্রহন করতে হবে। তাহলে তাদের সাথে আপনার সর্বোপরি সম্পর্কও উন্নত হবে। যেমন-

  • বয়সে আপনার ছোট হলে ছোটভাই বলে ডাকতে পারেন। 
  • সমবয়সী হলে বন্ধু বা দোস্ত বলে ডাকতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে আগে সেভাবে ফ্রি হয়ে তারপর ডাকতে হবে। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।    
  • একটু বড় হলে বড় ভাই ডাকতে পারেন। 
  • বেশী বড় হলে কাকা, মামা, খালু যেটা ভালোভাবে তার মনোভাবের সাথে যায়, সেই নামে ডাকুন।
  • যারা খুবই আধুনিক বা সম্মানিত কাষ্টমার/দোকানদার তাদের বস বলেও ডাকতে পারেন। তবে মনে রাখা জরুরী যে, এটা সময় বা পেক্ষাপটের উপর নির্ভর করবে।  
  • সহজ সরল চায়ের দোকানদারকে পটাতে বা মিশতে তাদের ভাষায় কথা বলুন বা চেষ্টা করুন। কারন শুদ্ধ ভাষা তারা সাধারণত পছন্দ করে না। 


৫. ছোট ছোট উপহারঃ কে না চায়, মানুষের কাছে এক্সট্রা এট্রাকশন পেতে। আপনাকে যদি হঠাৎই কেউ একটি কলম উপহার দিয়ে বলে, ভাই এটা আপনার জন্য। হয়তো আপনারও তার ব্যাপারে পজিটিভ একটি ধারণা তৈরি হবে। তাই দোকানিকেও চাইলে এই কৌশলে বধ করতে পারেন। এতে সে আপনাকে আরো নিকটবর্তী মনে করবে। এবং আপনার কাজে আপনাকে আরো বেশী করে সাহায্য করবে।

৬. কাজ পরবর্তী সেবা/আফটার সার্ভিসঃ শুধুমাত্র এই কারনেই প্রায় ৬৮ ভাগ প্রোটেনশিয়াল কাষ্টমার/দোকানি আপনার সাথে ব্যাবসায়ীক সম্পর্ক ত্যাগ করতে পারে। এটা লেখকের মতামত নয়। এটা একটি বাংলাদেশী গবেষণা ফার্মের দীর্ঘ গবেষণার ফলাফল।  

৭. বাড়তি সময় দেয়াঃ আপনি আমি কার সাথে বা কাদের সাথদ সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ব্যয় করি। সহজেই উত্তর আসে, "বন্ধুদের সাথে বা পরিবারের সাথে" আরো ভালো করে উত্তর চাইলে উত্তর আসবে, "ঘনিষ্ট বন্ধু, বাবা-মা, ভাই-বোন"। তাই মনে রাখবেন, কাষ্টমারের সাথে যদি ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চান তাহলে সময় বেশী দেওয়ার বিকল্প নেই। তাই তারা ফ্রি থাকলে তাদের সাথে দুঃখ, কষ্টের গল্প করুন। এতে কাজের রেজাল্ট আরো ভালো আসবে। সে আপনাকে বুঝতে পারবে। আপনিও তাকে ভালো করে বুঝতে পারবেন।  

তো আশা করি আমাদের বক্তব্য ভালোভাবে আপনি বুঝতে পেরেছেন, না বুঝে থাকলে কমেন্টে জানান। 

এমনকি, গুরুত্বপূর্ণ কোন পয়েন্ট মিস করে থাকলেও কমেন্টে জানিয়ে লেখাটি সম্পুর্ণ করতে ভূমিকা রাখুন। আর সেলস/মার্কেটিং বিভাগে লেখা পাঠাতে চাইলে আমাদের নিম্ন ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ
Email: totthomia@gmail.com
FB Page: facebook.com/totthomia
  

Post a Comment

0 Comments