Gunpowder- বারুদ |
আপনি কি জানেন বারুদ আবিষ্কার হয়েছিলো কিভাবে?
রুদ বা গানপাউডার না থাকলে বোমা, মিসাইল, বুলেট, ক্ষেপনাস্ত্র, কামান, আর্টিলারি, মর্টার কিছুই হয়তো আজ আবিষ্কার হতো না। তাই আজ আমাদের আয়োজন এই বারুদের আবিষ্কার নিয়ে। এই থ্রিলিং কাহিনী টি শেয়ার করার আগে বলে নেয়া ভালো, যদি কেউ আমাদের ব্লগে যে কোন ধরনের লিখা পাঠাতে চান তাহলে পাঠাতে পারেন, নিজের নাম অথবা আপনার ছদ্দনামে লিখাটি আমাদের ব্লগে প্রকাশ করা হবে। ব্লগে লিখার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে একেবারে নিচে চলে যান।
তখন নবম শতাব্দি চলছে। চীনা বিজ্ঞানীরা ব্যস্ত অমরত্বের ওষুধ আবিষ্কারে। কি করে মৃত্যুর হাত থেকে বাচা যায়। সম্রাটের আদেশ যে করেই হোক বানাতে হবে ওষুধ। সে নিয়ে তাদের বিশাল কর্মযজ্ঞ। তাদের গবেষণার একটা উপাদান ছিলো সল্টপিটার। এর সাথে আরো কিছু উপাদান মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ওষুধ। হঠাৎ তীব্র আলোর ঝলকানী আর শব্দে বিষ্ফোরিত হয় সব কিছু। লন্ডভন্ড হয়ে যায় পরিক্ষাগার। ভয়ংকর ভাবে আহত হয় পরিক্ষাগারের সবাই। আর এভাবেই আবিষ্কৃত হয় বারুদ বা গানপাউডার।
সবাই বুঝতে পারে সল্টপিটারই এসবের মূল। কাজ শুরু হয় কিভাবে এটাকে কাজে লাগানো যায়। চীনারা এটা প্রথমে নিছক আতসবাজি হিসাবেই ব্যবহার করতো প্রথমে। তারা বিভিন্ন উৎসবে ব্যবহার করতো খারাপ আত্মাকে দূরে রাখার জন্য।
প্রথম দিকে তারা বারুদ তৈরির উপাদানের সঠিক পরিমাপ আর অনুপাত সম্পর্কে ভালোভাবে জানতো না। তারা এটাকে পুজার মাঝেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলো। টাং সম্রাজ্যের সময়ে তারা সঠিক অনুপাতটি আবিষ্কার করে। তখন সম্রাটের বিশেষ দিবসে বাজি পোড়ানোর উদ্দেশ্যে বারুদ ব্যবহার করতো।
এই বারুদ যে যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করা যায় সেটা বুঝতে বুঝতেই তাদের চলে গিয়েছিলো আরো ২০০ বছর। তারা তৈরি করে কাঠের রকেট। ফাপা বাশের মাঝে বারুদ ভরে এই রকেট বানায় তারা। পেছনে আগুন লাগালেই সামনের দিকে ছিটে যেত রকেট। তারা কাঠের তৈরি কামানো বানিয়েছিলো।
এরপর তারা এটির ব্যবহার করে মংগোলিয়ানদের ওপর। মংগোলিয়ানরা প্রায়ই চিনে হামলা করতো। যখন তারা আক্রমণ করার জন্য আসতো তখন চীনারা মহাপ্রাচীর বা গ্রেট ওয়ালের উপর থেকে ছুড়ে মারতো আতশ বাজি। মংগোলিয়ানরা এই উদ্ভট জিনিশ থেকে ভয় পেয়ে যায়। তারা ভাবে এটা জাদু। তারা ভয়ে চলে যেতো।
কিন্তু অচিরেই তাদের জারিজুরি ফাস হয়ে যায়। মঙ্গোলিয়ানয়া তখন এটাকে আরো আধুনিক করে মারনাস্ত্র বানিয়ে ফেলে। তারা তীরের সাথে এটাকে ব্যবহার শুরু করে। মূলত তাদের থেকেই এই গানপাউডার চলে যায় ইউরোপিয়ানদের কাছে। তারা এটাকে আরো গবেষণা করে উন্নত করে। তখন তারা বুঝতে পারেন যে মিহিদানা থেকে বড় দানা অস্ত্রে কম চাপ ফেলে। ১২৪২ সালে রজার বেকন প্রথম বারুদ তৈরির প্রক্রিয়া বর্ণনা করেছিলান।
এই বারুদ থেকেই তৈরি হয় কামান। আর এই কামানের জোরেই অপেক্ষাকৃত কম সৈন্য নিয়ে মুঘলরা জয় করে নেয় বিশাল ভারতবর্ষ। এমনি আরো অনেক উদাহরন পাওয়া যাবে খুজলে।
তরাইনের যুদ্ধ, পানিপথের তিনটি যুদ্ধ, কনৌজের যুদ্ধ, পলাশীর যুদ্ধ, বক্সারের যুদ্ধের মত বড় বড় যুদ্ধের কারনে বারবার বদলেছে উপমাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। একসময় যুদ্ধের অস্ত্র মানেই ছিলো তীর, ধনূক, ঢাল-তরবারি আর বর্শা। এই বারুদের কারনেই লেখা হয়েছিলো নতুন নতুন ইতিহাস। ঘুরে গিয়েছিলো যুদ্ধের পদ্ধতি। একসময়ের ঢাল তলবারির ঝংকার বদলে গিয়ে হয়েছিল কামানের গর্জন।
তা যেটা বলেছিলাম, যদি কেউ লিখা পাঠাতে চান তাহলে নিচের ইমেইল ঠিকানা ও ফেইসবুক পেজের মেসেজ এ পাঠাতে পারেন।
লিখা পাঠানোর ঠিকানাঃ
Email: totthomia@gmail.com
FB Page: facebook.com/totthomia
0 Comments